২০২৫ বিশ্বব্যাপী ডেভেলপার কনফারেন্সে, অ্যাপল গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে যা তার প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে ঐতিহ্যবাহী নেতৃত্বের ভূমিকাকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। কোম্পানিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) উন্নয়নে ব্যর্থতা, দ্রুত পরিবর্তনশীল টেক বিস্তার এবং জোটগত বাণিজ্য উত্তেজনার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে তার কার্যক্রম এবং আর্থিক স্বাস্থ্যের উপর চাপ বাড়ছে। এক সময়ের বিশ্ব নেতা হিসেবে, অ্যাপল এখন গুগল এবং স্যামসাং-এর মতো প্রতিযোগীদের পিছনে রয়েছে, যারা গুরুত্বপূর্ণ AI অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং এই প্রযুক্তিগুলিকে তাদের পণ্য ও পরিষেবাগুলিতে আরও কার্যকরভাবে একীভূত করছে। গুগলের AI শক্তি এবং স্যামসাং-এর উদ্ভাবনগুলো অ্যাপলের প্রচেষ্টাকে অতিক্রম করেছে, যা বিশেষজ্ঞদের মনে করিয়ে দিচ্ছে যে অ্যাপল এই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে। অ্যাপলের Highly anticipated মিশ্র-বাস্তবতা হেডসেট ও সিরির AI উন্নয়ন প্রত্যাশিত ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করার জন্য পরিকল্পিত বৈশিষ্ট্যগুলো প্রত্যাশিতভাবে প্রদান করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই উন্নতিগুলোর দেরিতে আসা ওয়ালেটের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে অ্যাপলের উদ্ভাবন প্রবাহ সম্পর্কে। এই বছরের কনফারেন্সে প্রাধান্য পাবার প্রত্যাশা সফটওয়্যার আপডেটের ওপর, অত্যাধুনিক হার্ডওয়্যার নয়। iOS অপারেটিং সিস্টেমের হয়তো পুনঃনামকরণ একটি কৌশলগত পরিবর্তনের সংকেত দিতে পারে অ্যাপলের সফটওয়্যার নীতিতে। তবে, বড় কোনও পণ্য ঘোষণা বা AI ব্রেকথ্রু না থাকায় বোঝা যাচ্ছে যে কোম্পানি একটি স্থবির অবস্থানে রয়েছে, যেখানে ধাপে ধাপে পরিবর্তন আর বিপ্লবী পরিবর্তনের পরিবর্তে গুরুত্বপূর্ণ সামঞ্জস্যে জোর দেওয়া হচ্ছে। বহির্ভূতভাবে, অ্যাপল গুরুত্বপূর্ণ আইনগত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, বিশেষ করে এর অ্যাপ স্টোর নীতিমালা এবং ইন-অ্যাপ পেমেন্ট থেকে আয় সংক্রান্ত। ভবিষ্যতের আইনি রায়গুলো অ্যাপলের প্রতিৎস্‌ শতাধিক কোটি ডলারের গুগল সম্পর্কিত চুক্তি এবং broader অ্যাপ মনিটাইজেশন মডেলকে প্রভাবিত করতে পারে। বাণিজ্য উত্তেজনাও আরও বাড়ছে, বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শাসনামলে চীনা উত্পাদনক্ষেত্রে পুনরায় মার্কিন শুল্কের কারণে। অ্যাপলের অনেক সরবরাহ চেইন চীন থেকে পরিচালিত হওয়ায়, এই শুল্কগুলি এর খরচ কাঠামো ও লাভজনকতা হুমকির মুখে ফেলে দেয়, অপারেশনের উৎকর্ষতা ও প্রতিযোগিতামূলক মূল্যের ওপর অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে। এই সমস্যাগুলির কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; অ্যাপলের শেয়ার এবছর প্রায় ২০% কমে গেছে, প্রায় $৭৫০ বিলিয়ন মার্কেট ভ্যালু হারিয়ে, এটি গ্লোবাল মূল্যায়নে মাইক্রোসফট ও এনভিডিয়ার পেছনে তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে। এই পতন প্রযুক্তিগত পরিবর্তন এবং বাইরের চ্যালেঞ্জের সাথে অ্যাপলের মানিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য সম্পর্কিত উদ্বেগ প্রতিফলিত করে। তবে, এই বাধাসমূহের মাঝে অনেক শিল্প বিশ্লেষক সতর্কতামূলকভাবে আশাবাদী। তারা মনে করেন, AI একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রতিযোগিতা, ছোট রেস নয়, এবং অ্যাপলের পর্যাপ্ত সম্পদ, শক্তিশালী ব্র্যান্ড আনুগত্য ও উদ্ভাবনের ইতিহাস অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল সম্ভাবনা দেয় ভবিষ্যতে AI ক্ষমতা বৃদ্ধির এবং বাজারে পুনরায় সুবিধা পাওয়ার। সারসংক্ষেপে, ২০২৫ সালে অ্যাপলের বিশ্বব্যাপী ডেভেলপার কনফারেন্স একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, যেখানে আরও কঠিন নজরদারি ও চাপের মধ্যে কোম্পানিটির কৌশলগত পদক্ষেপ ভবিষ্যতের বাজার স্থিতি ও প্রযুক্তিতে তার প্রভাব সৃষ্টি করবে। চ্যালেঞ্জগুলো যথেষ্ট হলেও, পুনঃআবিষ্কার ও উদ্ভাবনের সক্ষমতা অ্যাপলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা বিশ্বব্যাপী টেক পরিবর্তনের রাজনীতিতে নজর রাখা জরুরি।